ইংরেজী নামঃ Leucaena
বৈজ্ঞানিক নামঃ Leucaena leucocephala
পরিবারঃ Leguminosae
পরিচিতিঃ ছোট থেকে মধ্যম আকারের চিরহরিৎ গভীরমূলী বৃক্ষ, উচ্চতা ৩-১৫ মিটার হয়ে থাকে। কচি শাখা মসৃণ, ধূসর-বাদামী কিন্তু বয়স্ক শাখা অমসৃণ এবং গাঢ় ধূসর-বাদামী বর্ণের। ফুল সাদা অথবা ফিকে হলুদ। ফল পড, ১১-১৯ সে.মি. লম্বা, বাদামী বর্ণের, চ্যাপ্টা, পাতলা এবং এতে ৮-১৮ টি বীজ থাকে। বীজ শক্ত এবং গাঢ় বাদামী বর্ণের।
ব্যবহারঃ
১) খুঁটি, কৃষি যন্ত্রপাতির হাতল তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
২) ডালপালা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
৩) পাতা এবং ফল পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
৪) পাতা এবং নরম ডালপালা কেটে টুকরো টুকরো করে মাটিতে মিশিয়ে সবুজ সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
জমি নির্বাচনঃ সুনিষ্কাশিত উঁচু জমিতে ভাল হয়। এটা কিছুটা লবনাক্ত এবং ক্ষারীয় মাটিতেও হতে পারে। তবে অধিক লবনাক্ত, এসিডীয় এবং জলাবদ্ধ মাটিতে হয় না।
জমি তৈরিঃ ভালভাবে চাষ ও মই দিয়ে জমি সমান ও আগাছা মুক্ত করতে হবে।
বংশবিস্তারঃ বীজের মাধ্যমে বংশবিস্তার করে।
বীজ সংগ্রহ ও বপণঃ অক্টোবর-নভেম্বর মাসে বীজ সংগ্রহ করে ২-৩ দিন রোদে শুকাতে হবে। মার্চ -এপ্রিল মাসে বীজ বপণ করতে হবে। বীজ বপণের পূর্বে ৪৮ ঘন্টা ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। অত:পর পলিব্যাগে বা সরাসরি জমিতে বীজ বপণ করতে হবে। ৪-৫ দিন পরেই বীজ হতে চারা গজায়।
রোপণ পদ্ধতিঃ লাইন বা বর্গাকার।
রোপণের সময়ঃ জুলাই-আগষ্ট।
চারা রোপণের দূরত্বঃ
১) জ্বালানির জন্য ১-২ মিটার।
২) কাঠের জন্য ৩-৪ মিটার।
গর্ত তৈরীঃ গর্তের আকার ৫০ সে.মি. x ৫০সে.মি. x ৫০সে.মি.।
প্রতি গর্তে সারের পরিমাণঃ চারা রোপণের ১০-১৫ দিন পূর্বে গর্তের মাটির সাথে নিম্নলিখিত হারে সার মিশিয়ে রাখতে হবে-
সারের নাম | পরিমাণ |
জৈব সার | ১০-১৫ কেজি |
ছাই | ১-২ কেজি |
ইউরিয়া | ৪০-৫০ গ্রাম |
টিএস পি | ১০০-২০০ গ্রাম |
এমওপি | ৫০-১০০ গ্রাম |
চারা রোপণঃ ৩-৪ মাস বয়সের চারা রোপণ করতে হবে।
সার প্রয়োগঃ
সারের নাম |
গাছের বয়স (গ্রাম/গাছ) |
||||
২ বছরের কম |
২-৪ বছর |
৪-৬ বছর |
৬-১০ বছর |
১০ বছরের বেশি |
|
জৈব সার |
৩৭৫ | ৫২৫ | ৭৫০ | ৭৫০ | ৭৫০ |
ছাই |
২৫ |
৩৫ |
৫০ |
৫০ |
৫০ |
ইউরিয়া | ২৫ | ৩৫ |
৫০ |
৫০ |
৫০ |
টিএসপি |
৫০ | ৭০ | ১০০ | ১০০ | ১০০ |
এমওপি | ২৫ | ৩৫ | ৫০ | ৫০ |
৫০ |
উক্ত সার সমূহ মিশ্রিত করে ছয় মাস পর পর প্রতি গাছে প্রয়োগ করতে হবে। গাছের বৃদ্ধি কম হলে টিএসপি ও এমওপির পরিমাণ কমিয়ে ইউরিয়া বাড়িয়ে দিতে হবে।
সেচ প্রয়োগ ও নিকাশঃ প্রতি বছর শুস্ক মৌসুমে সেচ দিতে পারলে ভাল হয়। গাছ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। তাই গাছের গোড়ায় যাতে পানি জমে থাকতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
ডাল ছাঁটাইকরনঃ মরা ও শুকনা ডালপালা ছেঁটে দিতে হবে।
রোগবালাই ও প্রতিকারঃ তেমন কোন রোগবালাই হয় না।
অনিষ্টকারী পোকা-মাকড়ঃ
১) সাইলিড পোকা
২) বীজ এর উইভিল
অন্যান্য পরিচর্যাঃ
১) চারা রোপনের পর গাছের গোড়া আগাছামুক্ত রাখতে হবে।
২) গাছে বেড়া দিতে হবে।
৩) চারায় খুটি বেঁধে দিতে হবে।