ইংরেজী নামঃ Anantamul
বৈজ্ঞানিক নামঃ Hemidesmus indicus
পরিবারঃ Periplocaceae
পরিচিতিঃ সরু এবং লতা জাতীয় উদ্ভিদ। পাতা লোমযুক্ত এবং কান্ডের দু’দিকে জন্মায়। কিছূটা ডিম্বাকৃতির অথবা লম্বা এবং আগার দিকটা মোটা থাকে। ফলের বাইরের দিকের রং সবুজ আর ভেতরে বেগুনী। বীজ ছোট ও চ্যাপ্টা, রং কালো। গাছের পাতার মাঝখানে সাদা দাগ থাকে।
ঔষধি ব্যবহারঃ
১) তিন গ্রাম অনন্তমূল বেটে গরুর দুধের সঙ্গে জ্বাল দিয়ে দই পেতে, সেই দই খেলে অর্শ রোগে উপকার হয় এবং খাবারে রুচি ও ক্ষিদে বাড়বে।
২) জিভ ও মুখের ঘাতে ২০ মিলিলিটার ভেড়ার দুধে শুকনো অনন্তমূল ঘষে মাঝে মাঝে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।
৩) তিন গ্রাম অনন্তমূল সামান্য পানি দিয়ে বেটে এক কাপ জ্বাল দেয়া গরুর ঠান্ডা দুধে মিশিয়ে সকাল-বিকেল মোট দু’বার খাওয়ালে ঋতু নিয়মিত হবে এবং স্রাবে কোন দুর্গন্ধও থাকবে না।
৪) ৬০/৭০ গ্রাম অনন্তমূল ছোট ছোট করে কেটে ২০ মিলিলিটার পানিতে সারারাত ভিজিয়ে সে পানি পরিস্কার পাতলা কাপড়ে ছেঁকে পান করলে ৩/৪ গুন বেশি প্রসাব হয় এবং মূত্ররোধ রোগে উপকার পাওয়া যায়।
৫) ২/৩ গ্রাম শুকনো অনন্তমূল গুঁড়ো সকালে খালিপেটে এক গ্লাস ঠান্ডা পানি দিয়ে খেলে ক্ষুধা ও হজমশক্তি বাড়ে।
৬) ২-৩ গ্রাম অনন্তমূল শিলে বেটে দু’চামচ চিনি মিশিয়ে ঠান্ডা পানিতে শরবত বানিয়ে খেলে পিত্ত কমে এবং হাত-পায়ের তালুর জ্বালা পোড়া দূর হয়।
৭) ১২৫ গ্রাম অনন্তমূল এবং দেড় লিটার পানি একটি মাটির হাঁড়িতে রেখে এর মুখ মাটির সরা দিয়ে চেপে ৪০ মিনিট সিদ্ধ করতে হবে। অত:পর তা ঠান্ডা করে ছেঁকে দিনে একবার করে চায়ের কাপের এক কাপ পরিমাণ খেলে মায়েদের বুকের দুধ বাড়বে।
জমি নির্বাচনঃ প্রায় সব ধরনের মাটিতেই জন্মে।
জমি তৈরিঃ জমি ভালভাবে চাষ দিয়ে আগাছামুক্ত করে নিতে হবে। চারা রোপণের পূর্বে বীজতলার মাটি বা গর্তের মাটির সাথে জৈব সার ৩ঃ১ অনুপাতে মিশাতে হবে।
বংশ বৃদ্ধিঃ অঙ্গজ পদ্ধতিতে বংশ বৃদ্ধি করে।
বীজ বপণ/চারা রোপণঃ কাটিং মাটি ও জৈব সার (৩ঃ১) মিশ্রিত মাটিতে লাগাতে হবে। লাগানোর পর পানি দিতে হবে।
পরিচর্যাঃ
১) আগাছা পরিস্কার করতে হবে।
২) শুস্ক মৌসুমে পানি সেচের ব্যবস্থা করতে হবে।
৩) গাছে সার না দিলেও চলে। তবে প্রতি বছর ১০-১৫ কেজি জৈব সার দুই কিস্তিতে – ১ম কিস্তি মধ্য ফাল্গুন-মধ্য বৈশাখ (মার্চ-এপ্রিল) মাসে এবং দ্বিতীয় কিস্তি মধ্য আশ্বিন-মধ্য অগ্রহায়ন (অক্টোবর-নভেম্বর) মাসে প্রয়োগ করলে ভাল হয়। গাছের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে জৈব সারের পরিমাণ ১০% বৃদ্ধি করতে হবে।
ফুল আসার সময়ঃ বৈশাখ-আষাঢ় (মধ্য এপ্রিল-মধ্য জুলাই)।
ফল ধরার সময়ঃ শ্রাবন-আশ্বিন (মধ্য জুলাই-মধ্য অক্টোবর)।